চরফ্যাশন (ভোলা) প্রতিনিধি: ভোলার চরফ্যাশনে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের জারি করা নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে এক কৃষক পরিবারের প্রায় ১০০ বছরের ভোগদখলকৃত জমি দখল ও পাকা ধান কেটে নেওয়ার চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে মো. বিল্লাল নামে এক বিএনপির কর্মীর বিরুদ্ধে।
ঘটনাটি চরফ্যাশন উপজেলার আমিনাবাদ ইউনিয়নের হালিমাবাদ গ্রাম ৩ নম্বর ওয়ার্ডে।
অভিযোগকারী হলেন চরফ্যাশন উপজেলার ওসমানগঞ্জ ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মৃত আব্দুল খালেকের ছেলে মো. আবুল কালাম ও তার ছোট ভাই মো. নুরুল ইসলাম।
অভিযুক্ত হলেন উপজেলার আমিনাবাদ ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা কালিমুল্লার ছেলে মো.বিল্লাল। তিনি ওই ওয়ার্ডের বিএনপির কর্মী।
অভিযোগে আবুল কালাম ও তার ছোট ভাই নুরুল ইসলাম জানান, আমিনাবাদ ইউনিয়ন ৩ নম্বর ওয়ার্ড হালিমাবাদ গ্রাম আমিনাবাদ মৌজার জেএল নং-৬৬ এর বিভিন্ন দাগে আমার দাদা মৃত আব্দুল হাসিমের নামে প্রায় ৯ একর ৬০ শতাংশ জমি রয়েছে। ওয়ারিশ সূত্রে আমার বাবা আব্দুল খালেক জমির মালিক হন। এরপর আমরা বাবা মৃত্যুবরণ করার পর ওয়ারিশ সূত্রে আমরা জমির মালিক হয়েছি। আমার দাদা ও আমার বাবার আমল থেকে প্রায় ১০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে ওই জমি ভোগদখল করে চাষাবাদ করে আসছি। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর অভিযুক্ত মো. বিল্লাল জমি দখলে মরিয়া হয়ে ওঠেন।
তারা অভিযোগে আরও জানান, বিল্লাল বিএনপির ক্ষমতার প্রভাব দেখিয়ে আমাদের জমি দখল ও বর্তমানে জমির ধান কাটার চেষ্টা করছেন। এবং হুমকি ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করে আসছেন। এ ঘটনায় আমরা চরফ্যাশন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করি। আদালত জমির কাগজপত্র পর্যালোচনা করে জমির ওপর বিবাদীদের বিরুদ্ধে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারির আদেশ দেন। মামলার নম্বর- ৩৬১/২৫। আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে অভিযুক্ত বিল্লাল জমি দখল ও ধান কাটার পায়তারা অব্যাহত রেখেছেন এবং আমাদেরকে জমি ছেড়ে দিতে বিভিন্নভাবে হুমকি দিচ্ছেন। এতে আমরা চরম আতঙ্ক ও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।
রবিবার (২১ ডিসেম্বর) বেলা ১২ টার দিকে সরেজমিনে গিয়ে স্থানীয় একাধিক কৃষক সূত্রে জানা গেছে, ভুক্তভোগী আবুল কালাম ও তার ছোট ভাই নুরুল দীর্ঘদিন ধরে এই জমিতে চাষাবাদ করছেন। তারা ধান রোপণ করেছেন। ৫ আগস্টের পর মো. বিল্লাল নামে এক যুবক বিএনপির কর্মী পরিচয়ে জমি দখল ও চাষাবাদ করা ধান কেটে নেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছেন। এতে ভুক্তভোগী পরিবারটি চরম আতঙ্ক ও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। আমরা প্রশাসনের প্রতি দাবি জানাচ্ছি। প্রশাসন যেন অবিলম্বে পদক্ষেপ নেয়। এবং ভুক্তভোগীরা যেন ন্যায় বিচার পায়।
অভিযুক্ত মো. বিল্লাল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমাদের দাদা অলিউল্লাহ ও তার ভাই মুজাফফর ৭ একর ২০ শতাংশ জমির মালিক ছিলেন। ওয়ারিশ সূত্রে আমার বাবা কালিমুল্লা ওই জমির মালিক। আমরা কারো জমি দখলের চেষ্টা করছি না। আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।
চরফ্যাশন থানার (ওসি) জাহাঙ্গীর বাদশা জানান, ওই জমির ওপর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের স্বাক্ষরিত নিষেধাজ্ঞা পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে আইন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।








